গবাদি পশুর গো🌱 ~খাদ্যের নিশ্চিত করতে হবে

গবাদি পশুর গো-খাদ্যের নিশ্চিত

গবাদি পশুর (গরু=ছাগল=ভেড়া = ইত্যাদির)   জন্য সারা বছর সবুজ ঘাসের সরবরাহ নিশ্চিত করন 👍
ছাগল-ভেড়ার খামার করতে খামারের 60=75% খরচ হয় খাবারে। তাই খাবার ব্যবস্থাপনা হওয়া দরকার সপুরিকল্পিত। ছাগল-ভেড়ার খামারের অন্যতম পূর্ব শর্ত হলো সারা বছর পর্যাপ্ত ঘাসের যোগান নিশ্চিত করা। শ্রাবণ থেকে মাঘ পর্যন্ত ঘাসের উৎপাদন কম থাকে। সে জন্য সারা বছরের ঘাস নিশ্চিত করার জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা। যখন ঘাসের উৎপাদন খুব বেশি থাকে যেমন-ফাল্গুন থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত,  এ সময়ে ঘাস সাইলেজ করলে আপদ কালীন সময় ঘাসের চিন্তা থেকে নিশ্চিত থাকা যেতে পারে।

👉ছাগলের সংখ্যানুযায়ী ঘাস  উৎপাদন।
100 ছাগলের জন্য কমপক্ষে 100 শতক {1 একর)}জমিতে নেপিয়ার/পাকচং / ভূট্টা ঘাস থাকতে হবে। যখন ঘাসের পর্যাপ্ত উৎপাদন আসবে অতিরিক্ত ঘাস সাইলেজ করতে হবে।
আর পাশাপাশি লুসার্ন/লিগুমিয়াস জাতীয় ঘাস লাগাতে হবে। এ জাতীয় ঘাসে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে।

👉পুষ্টিগুন অনুযায়ী বিভিন্ন সবুজ ঘাসঃ
পুষ্টিগুন অনুযায়ী বিভিন্ন সবুজ ঘাস গুলি কে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
1}বেশি পরিমাণ আমিষ{12/20%) বারসীম:লুসার্ন,বরবটি,গাইমুগ,সুবাবুল এই পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।
2}মাঝারি পরিমাণ আমিষ{8/10%}ভুট্টা,জোয়ার,নেপিয়ার:পাকচং :প্যারা ঘাস,গিনি ঘাস,দীননাথ,স্টাইলো ঘাস এই পর্যায়ের অর্ন্তভুক্ত।
3} কম পরিমাণ আমিষ{8%}হে বা শুকনো সবুজ ঘাস,চরিয়ে খাওয়ার ঘাস।
গবাদি পশুর জন্য সারা বছর সবুজ ঘাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে  কোন শ্রেনীর ঘাস কোন মৌসুমে কি ঘাস লাগাতে হবে তা জানা একান্ত জরুরী। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ভাল ফলন বা উৎপাদন পাওয়া যায় এমন কিছু ঘাসের বর্ননা দেয়া হলো।
         স্থায়ী ঘাসের নাম
👉স্থায়ী ঘাসঃ-নেপিয়ার,পাকচং, পারা,জার্মান,গিনি_সিগনাল_হেমিল_স্টার_বাকশা পেংগুলা_

রোডস_পেনিসটাস_বাফেল_সেটারিয়া_

এন্ড্রোপোগন_পিস্নকাটলুম_

গুয়াতেমালা =ইত্যাদি ইত্যাদি ।

👉অস্থায়ী ঘাসঃ-ভূট্টা,কাউপি_মাসকালাই,সেন্টোসীমা_পয়রো,সিরাট্রো_গস্লাই সিন_গ্রীনলিফ,ডেসমোডিয়াম_সিলভারলিফ_ডেসমোডিয়াম_

ক্যালোপো_স্টাই লো_পিনটুন_পিনাট_সরগম ইত্যাদি।

👉গ্রীষ্মকালীন অস্থায়ী ঘাসঃ- সরগম,ভূট্টা।

👉গ্রীষ্মকালীন অস্থায়ী শুটি জাতীয় ঘাসঃ- কাউপি,মাস কালাই।

👉শীতকালীন অস্থায়ী শুটি জাতীয় ঘাসঃ- বারসীম,খেঁসারি ইত্যাদি।

👉নেপিয়ার ঘাসঃ- বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এগুলো খুব ভাল হয়। প্রায় সব রকম মাটিতেই এ ঘাস রোপণ করা যায়,তবে বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষ সব চেয়ে উপযোগী। নেপিয়ার ঘাস সারা বৎসরই রোপন করা যায়।
সাধারণতঃ বর্ষা মৌসুমেই রোপন করা ভাল।এপ্রিল=

মে হতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ঘাস রোপণের উত্তম সময়। বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিপাতের পরে লাগালেএকই বছরে ফলনের জন্য বেশী সময় পাওয়া যায়। ভাল পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অর্থাৎ যেখানে বৃষ্টি বা বর্ষার পানি জমে থাকে না,এরূপ জমি নেপিয়ার চাষের উপযুক্ত।

👉পাকচুং ঘাসঃ 1}তিনটি  গিট থাকে এরকম কাটিং হলে ভাল হয়।
2} দুইটি কাটিং এর মধ্যবর্তী দুরত্ব রাখতে হবে 3 ফিট আর দুইটি লাইনের মধ্যবর্তী দুরত্ব 4 ফিট রাখলে ভাল হয়।
3} প্রতি গর্তে 2 টা কাটিং ক্রস করে 45ক্ক কোন করে লাগাতে হবে।
4}ভাল ফলন পাবার জন্য শুষ্ক মৌসুমে প্রতি 5/10 দিন পর পর সেচ দিতে হবে।
5} প্রথম  রোপনের 60 দিন পর এবং পরবর্তীতে 45 /55 দিন পর পর কাটিং সংগ্রহ করে খাওয়ানো যাবে।
6} যদি কাটিং সংগ্রহ করে লাগাতে চান তাহলে রোপনের পর 95/120 দিন অপেক্ষা করতে হবে।
7}এই ঘাসের ফলন খুব ভাল।প্রতি বছর প্রতি একরে 230/250মে.টন ঘাস হতে পারে। {পাকচুং ঘাস ডাঃসুচয়ন চৌধুরী;  উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অঃদাঃ)
রাঙ্গামাটি সদর-এর লেখা থেকে}

{এটি নেট সংরক্ষিত}

👉পারা ঘাসঃ- বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এগুলো খুব ভাল হয়। প্রায় সবরকম জমিতেই এ ঘাস আবাদ করা যায়। উঁচু_নিচু_ঢালু জলাবদ্ধ এমনকি লোনামাটি তেও এ ঘাস ভাল জন্মায়  সেখানে পারা ঘাস অধিক পরিমাণে ফলন দিয়ে থাকে। পারা ঘাস যেহেতু জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে তাই যে স্থানে এবং জলাবদ্ধ জায়গা পুকুর,ডোবা ও বাঁধের ধারে এ ঘাসের চাষ করা যেতে পারে। বৈশাখ হতে আশ্বিন মাস পারা ঘাসের চাষের উপযুক্ত সময়।

👉জার্মান ঘাসঃ- জার্মান ঘাস স্থায়ী ঘাস। জার্মান ঘাস পারা ঘাসের মতো নিচু ও জলাবদ্ধ জমিতে চাষ করা যায়। জার্মান ঘাস দাঁড়ানো পানিতে জন্মানো যায় । যে সমস্ত জমিতে সারা বছর পানি থাকে অথবা কিছু কাল ডুবে থাকে, সে সব জমিতে এ ঘাস চাষ করা যায়। এছাড়া খাল,বিল,মজা পুকুর,নদীর ধার, ডোবা,নালা এই ঘাস চাষের জন্য উপযুক্ত। মার্চ হতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ঘাস চাষের উপযুক্ত সময়।

👉জাম্বো ঘাসঃ- জাম্বো ঘাস একটি স্থায়ী সবুজ ঘাস। যা সারা বছরই এটি যে কোনো আবহাওয়াতে আবাদ করা যায় এবং বছরের যে কোন সময় চাষ করা যায় তবে উত্তম সময় হচ্ছে ফাল্গুন_চৈত্র মাস। বেলে মাটি ব্যতীত সব ধরনের মাটিতেই জাম্বো ঘাস চাষ করা যায় তবে সেচ ব্যবস্থা যুক্ত এটেল ও দোআঁশ মাটিতে চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।

👉গিনি ঘাসঃ- গিনি ঘাস দেখতে অনেকটা ধান গাছের মত।পারা ও নেপিয়া রের তুলনায় জলীয় ভাগ কম এবং খাদ্যমান বেশী। গিনি ঘাস উঁচু ও ঢালু জমিতে হয়। জলাবদ্ধ স্যাঁতসেতে এবং নীচু জমিতে ভাল হয় না। এ ঘাস ছায়াযুক্ত স্থানেও হয়। বর্ষা মৌসুমে লাগাতে হয় তবে বেশী বৃষ্টি বা জলাবদ্ধ অবস্থায় চারার গোড়া পঁচে মরে যেতে পারে।

👉গীমাকলমিঃপাতা জাতীয় সবজি হিসাবে গীমাকলমি একটি লাভ জনক সবজি। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ও সুস্বাদু এ সবজি বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে ।
মাটিঃ পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত সবরকমের উর্বর জমি গীমকলমী চাষের উপযোগী। তবে দোয়াশ বা পলি দোয়াশ মাটি বেশি উপযোগী। মাটি ও জমির প্রকারভেদে ৬ টি চাষ ও মই দেওয়া প্রয়োজন এবং জমি গভির করে চাষ করতে হবে ।
MD BOSHIR AHAMMED
👉বপনের সময়ঃ বছরের যে কোন সময়েই চাষ করা যেতে পারে। চৈত্র মাস (মধ্য-মার্চ থেকে মধ্য-এপ্রিল) থেকে শুরুকরে শ্রাবন মাস (মধ্য-জুলাই থেকে মধ্য-আগষ্ট) পর্যন্ত লাগানো যেতে পারে ।

👉সারের পরিমানঃ গীমাকলমির জমিতে হেক্টর প্রতি ইউরিয়া 140_160 কেজি_টিএসপি

100_ 120 কেজি এমওপি 100_120 কেজি ও গোবর বা কম্পোষ্ট ৮ থেকে 10 টন প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি ইউরিয়া সার 3 কিস্তিতে যথাক্রমে ১ম  _২য় _৩য় বার ফসল কাটার পর প্রয়োগ করতে হবে ।
পানি সেচঃ বর্ষাকালে সাধারনত পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। তবে এক নাগাড়ে বৃষ্টি না হলে 10_15দিন অন্তর পানি সেচ দেওয়া আবশ্যক ।
আর্ন্তবতীকালীন পরিচর্যাঃ
চারা গজানোর পর প্রত্যেক বেডে অর্থাৎ প্রতি 15 সেমি অন্তর 1 টি করে চারা রাখতে হবে। জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে ।

নুরে মদিনা ছাগলের খামার

No comments

Powered by Blogger.